ফুলকুঁড়ি আসর
দেশ সেবায় ব্রত সদা সুন্দরের পতাকাবাহী শিশুকিশোরদের একটি সংগঠন। জ্ঞানের সাধনায় সদা তৎপর শিশুকিশোরদের এক সুশৃঙ্খল সমাবেশ। সৎ ও যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে শিশুকিশোরদের এক সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টা।
আদর্শ ও উদ্দেশ্য
আদর্শ : একতা, শিক্ষা, চরিত্র, স্বাস্থ্য ও সেবা।
উদ্দেশ্য : কোমলমতি শিশুকিশোরদের একতাবদ্ধ করে শিক্ষা ও শরীরচর্চামূলক কর্মসূচির মাধ্যমে চরিত্রবান এবং স্বাস্থ্যবান রূপে গড়ে তুলে দেশ ও দশের সেবা করা।
মূলমন্ত্র ও স্লোগান
মূলমন্ত্র : নিজকে গড়ো।
প্রধান স্লোগান :
পৃথিবীকে গড়তে হলে সবার আগে নিজকে গড়ো।
কর্মসূচি
শিক্ষা-সাহিত্য বিভাগ :
পাঠাগার স্থাপন, ক্যাম্প, সাহিত্যসভা, বইপাঠ প্রতিযোগিতা, শিক্ষাবৈঠক, ভাষা শিক্ষার আসর, গল্প বলার আসর ইত্যাদি।
সাংস্কৃতিক বিভাগ :
দিবস পালন, গান, অভিনয়, আবৃত্তিসহ সাংস্কৃতিক প্রশিক্ষণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বনভোজন, নাটক মঞ্চায়ন ইত্যাদি।
খেলাধুলা ও ব্যায়াম বিভাগ :
কুচকাওয়াজ, শরীরচর্চা, রুটমার্চ, র্যালী, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা,
মৌসুমী খেলাধুলা ইত্যাদি।
কৃষি-শিল্প-বিজ্ঞান বিভাগ :
বাগান তৈরি, বৃক্ষরোপণ, হস্তশিল্প, এসো অঙ্কন শিখি, খুদে বিজ্ঞানীর আসর, বিজ্ঞান প্রজেক্ট তৈরি, বিজ্ঞানভ্রমণ, বিজ্ঞানমেলা ইত্যাদি।
সমাজসেবা বিভাগ :
অক্ষরজ্ঞান দান, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান, আই ক্যাম্প, ব্লাড গ্রুপিং, ঈদবস্ত্র ও শীতবস্ত্র বিতরণ, প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা ইত্যাদি।
সদস্য
ষোল বছরের উর্ধ্বে নয় এমন বয়সের শিশুকিশোরেরা ফুলকুঁড়ি আসরের সদস্য হতে পারবে।
ফুলকুঁড়ি সদস্যের কাজ
১। আসরের কাজে অংশগ্রহণ।
২। নতুন সদস্য বৃদ্ধি।
৩। ফুলকুঁড়ি আইন মেনে চলা।
৪। নিয়মিত ফুলকুঁড়ি পত্রিকা পড়া।
ফুলকুঁড়ি আইন
১। ফুলকুঁড়িরা একে অপরের ভাই। একজন আরেকজনকে দেখলে সালাম দিবে।
২। সবসময় সত্য কথা বলতে হবে এবং কথা ও কাজে মিল থাকতে হবে।
৩। বড়দের সম্মান করতে হবে, ছোটদের ভালোবাসতে হবে এবং বন্ধুদের সাথে আচরণে আন্তরিক হতে হবে।
৪। অন্যের দোষ ধরার আগে দেখতে হবে সে দোষ নিজের মধ্যে আছে কিনা।
৫। এক ফুলকুঁড়ি অন্য ফুলকুঁড়ির ভুল দেখলে টিটকারি না করে বা সবাইকে বলে না বেড়িয়ে সহানুভূতির সাথে তা ধরিয়ে দিবে। কেউ ভুল ধরিয়ে দিলে রেগে না গিয়ে সহজভাবে মেনে নিতে হবে।
৬। অহেতুক তর্ক কিংবা ঝগড়া এড়িয়ে চলতে হবে।
৭। নিয়মিত পাঠ্যবই পড়তে হবে।
৮। শরীর ও স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে হবে এবং সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
৯। কোনো সভা বা অনুষ্ঠানে কথা বলতে হলে অথবা বাইরে যেতে হলে পরিচালকের অনুমতি নিতে হবে।
১০। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সাধ্যমত মানুষের সেবা করতে হবে।
ফুলকুঁড়ি পোশাক
ডাবল শোল্ডার ও ঢাকনাযুক্ত পকেটসহ সাদা ফুলশার্ট, নেভি ব্লু ফুলপ্যান্ট, সাদা কেডস, সাদা মোজা, সাদা রেখা সম্বলিত নেভি ব্লু স্কার্ফ, সাদা রেখাসহ তিন ভাঁজের খাড়া নেভি ব্লু টুপি।
আসর
আসর হচ্ছে সংগঠনের প্রাথমিক ইউনিট। কোনো এলাকায় ১৫ জনের বেশি সদস্য থাকলে শাখার অনুমতি নিয়ে আসর গঠন করা যাবে।
বন্ধুরা ...
আজ যারা কুঁড়ি, আগামীতে তারাই ফুটবে ফুল হয়ে। আপন রঙে রাঙিয়ে দিবে এই পৃথিবীকে। ফুলের সৌরভে বাগানে নেমে আসবে খুশির জোয়ার। আমাদের সমাজেও আমরা সে আনন্দ ছড়িয়ে দিতে চাই। সমাজ থেকে দূর করতে চাই অজ্ঞানতা, কুসংস্কার আর অশিক্ষার অন্ধকার। হিংসা-বিদ্বেষ, লোভ, ঘৃণা নয়; আমরা চাই সত্য, ন্যায় ও ভালবাসার বিজয়। তাই এ সমাজে ফোঁটাতে চাই ফুল। জ্ঞানের উজ্জ্বল আলো আর চরিত্রের সৌরভ ছড়িয়ে সে ফুল হাসবে আমাদের সমাজে। এমনই হাজারো ফুল ফুটাবার দীপ্ত শপথেই ফুলকুঁড়ি আসরের জন্ম।
শিশুকিশোরদের কাছে তাই ফুলকুঁড়ির আহ্বান-
এসো সুন্দর করে গড়ে তুলি নিজেদেরকে
সত্য ও সুন্দরের রঙে রাঙিয়ে দেই এই পৃথিবীকে
বিলিয়ে দেই ফুলের সুবাস
সবার তরে
দেশের তরে।